ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ উঠেছে, পাইকগাছা পৌরসভার পক্ষ থেকে সামাজিক বনায়নের অংশ হিসেবে রোপণকৃত শতাধিক পরিবেশবান্ধব গাছ কেটে তা মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাইকগাছা বাজার সংলগ্ন শিবসা নদীর চরভরাট জমিতে বাতিখালী চর বনায়ন উপকারভোগী সমিতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কেওড়া, গরান, গেওয়া, সুন্দরী ও গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে। নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো ইতিমধ্যে বেশ বড় ও পরিবেশ উপযোগী হয়ে উঠেছে। তবে সম্প্রতি পৌরসভা কর্তৃক শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও বাজার এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের কাজ করতে গিয়ে রাতের আঁধারে এই গাছগুলো কেটে ফেলা হয় এবং মাটি দিয়ে চাপা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাতিখালী চর বনায়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামিরুল ইসলাম বলেন, “রাতের আঁধারে আমাদের শতাধিক গাছ পরিকল্পিতভাবে কেটে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। এটি একটি পরিবেশ ও সম্পত্তি ধ্বংসের সুস্পষ্ট উদাহরণ।”
এ ঘটনায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নাঈম এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী শাফিন শোয়েব বলেন, “রাতের বেলায় গাছ কাটার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রবির কুমার জানান, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। আগামীকাল অফিসে গিয়ে সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।”
এ বিষয়ে পৌরসভা ইঞ্জিনিয়ার নুর আহমদ বলেন, “ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করছিল, তবে গাছ কাটার সময় আমাদের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না।”
পৌরসভার সচিব লালু সরদারও গাছ কাটার বিষয়ে অজ্ঞতার কথা জানান।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মাহেরা নাজনীনকে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের অবহেলা ও পৌরসভার দায়িত্বহীনতার ফলে পরিবেশবান্ধব এই গাছগুলো ধ্বংস হয়েছে। তারা দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় পরিবেশবাদী সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।