ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
সকাল সাড়ে ৮টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিহিত অবস্থায় মমতাজ বেগমকে আদালতে আনা হয়। তাকে দেখতে এবং বিচারপ্রক্রিয়া ঘিরে আদালত চত্বরে ভিড় করেন শত শত মানুষ।
তবে উত্তেজনার পারদ তখন চরমে পৌঁছায়, যখন উৎসুক জনতা আদালত চত্বরে প্রবেশের সময় মমতাজকে বহনকারী প্রিজনভ্যান লক্ষ্য করে ডিম ও জুতা ছুঁড়ে মারেন। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও জনতার ক্ষোভ প্রকাশ আটকানো যায়নি।
অভ্যন্তরে শুনানিকালে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেইসঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণে মমতাজের বিরুদ্ধে স্লোগান ও ফাঁসির দাবি তুলে বিক্ষোভ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন খান। তবে মমতাজ বেগমের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জ কোর্টের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের।
জানা যায়, ২০১৩ সালে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় এক হরতাল চলাকালে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতদের একজনের স্বজন মো. মজনু মোল্লা গত বছরের ২৫ অক্টোবর মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া, তার নির্বাচনী এলাকা হরিরামপুরে হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরও একটি মামলা রয়েছে। মামলাটি করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন। আদালত সূত্র জানায়, এ দুই মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই ভিন্ন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
এর আগে রাজধানীর কয়েকটি থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় মমতাজ বেগম চারদিনের রিমান্ডে ছিলেন। রিমান্ড শেষে তাকে ফের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়, সেখান থেকেই আজ আদালতে হাজির করা হয়।
এই ঘটনায় রাজনীতিক অঙ্গনসহ সাধারণ জনগণের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে এতগুলো মামলা ও জনরোষ নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।