ছবি : সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্পের এই মন্তব্য মার্কিন প্রশাসনের পূর্ববর্তী অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। যুদ্ধ শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে ওয়াশিংটন দাবি করেছিল, ইসরায়েল ‘এককভাবে’ ওই আক্রমণ চালিয়েছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
ট্রাম্প এদিন বলেন, ‘ইসরায়েল প্রথমে আক্রমণ করেছে। সেই হামলাটা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি সে সময় পুরো বিষয়টির দায়িত্বে ছিলাম।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘যখন ইসরায়েল ইরানে প্রথম আক্রমণ চালায়, সেটা ছিল ইসরায়েলের জন্য এক মহাদিবস। কারণ সেই হামলায় যতটা ক্ষতি হয়েছিল, তার সমান ক্ষতি পরবর্তী সব আক্রমণ মিলিয়েও হয়নি।’
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প মূলত সিনেটে ফিলিবাস্টার নিয়ম বাতিলের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে এই উদাহরণ টেনে আনেন। তিনি রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানান, ইসরায়েল যেমন দৃঢ়তার সঙ্গে ইরানে যুদ্ধ শুরু করেছিল, তাদেরও তেমন দৃঢ়তার সঙ্গে সিনেটের এই নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে।
প্রেক্ষাপট: অস্বীকার থেকে স্বীকারোক্তি
গত ১৩ জুন কোনো প্রত্যক্ষ উসকানি ছাড়াই ইসরায়েল ইরানে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। এতে দেশটির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ জেনারেল, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষ নিহত হন। এর জবাবে ইরানও ইসরায়েলের দিকে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে মধ্যপ্রাচ্যে পুরোদমে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘ইসরায়েল একতরফাভাবে ইরানে হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযানে জড়িত নয়। আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এখন মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা।’
পরবর্তীতে ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। পরে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ট্রাম্প এর আগেও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করেছেন বলে কৃতিত্ব দাবি করে আসছিলেন। তবে বৃহস্পতিবারের বক্তব্যে তিনি প্রথমবার যুদ্ধের সূচনাতেই নিজের সরাসরি নেতৃত্বের কথা স্বীকার করলেন।
এই স্বীকারোক্তি এমন সময়ে এলো যখন ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তির প্রার্থী’ হিসেবে তুলে ধরছেন এবং ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য একটি নতুন চুক্তির আগ্রহ দেখাচ্ছেন। যদিও এই যুদ্ধের পর থেকে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা কার্যত থেমেই আছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...