বিজ্ঞাপন
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ বলেছেন, “একটা পরিপূর্ণ অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আমাদের সংলাপ অনির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।”
গত বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত সংলাপে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা বসেছিলেন। সংলাপের মূল উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা। কিন্তু আকাংক্ষিত চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি এবং সংলাপ প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে।
সংলাপে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়ে আসিফ বলেছেন, “আমরা আফগানিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছিলাম সন্ত্রাসের মূলোৎপাটনের জন্য, এবং কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীরা আমাদের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। আফগান প্রতিনিধিরাও আমাদের অবস্থানের সঙ্গে সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু যখনই শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রসঙ্গ এলো, তারা পিছিয়ে গেলেন। তারা চান, আমাদের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে। কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনায় চুক্তি বা সমঝোতা ছাড়া কীভাবে এগোনো যায়?”
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই তিক্ত। বিশেষ করে ২০২১ সালে তালেবান বাহিনী কাবুল দখল ও সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। মূল সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
কট্টর ইসলামপন্থি এই গোষ্ঠীর ধারাবাহিক হামলায় কয়েক হাজার সামরিক ও বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান কয়েক বছর আগে এই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও কাবুলে তালেবান সরকারের অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে টিটিপির কার্যক্রম আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের সীমান্তবর্তী এ গোষ্ঠীর লক্ষ্য পাকিস্তানের ওই অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে কট্টর ইসলামপন্থি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
গত ৯ অক্টোবর রাতে কাবুলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিমান অভিযান চালিয়ে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ নিহত করেন। দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ অন্য সম্মুখ সারির নেতা ও নিহত হন। দুই দিন পর আফগান সেনারা পাকিস্তান সীমান্তবর্তী সেনা চৌকিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেয়। সংঘাতে আফগান সেনার ২০০-এর বেশি এবং পাকিস্তানি সেনার ২৩ জন যোদ্ধা নিহত হন।
সংঘাতের চার দিন পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। এই বিরতির মধ্যে কাতারের দোহায় এবং পরে ইস্তাম্বুলে সংলাপে বসেন সরকারি প্রতিনিধিরা।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কর্মকর্তারাও হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। তাদের যদি ন্যূনতম আশা থাকতো, তারা আমাদের সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিতেন। কিন্তু কাবুলের কারণে তারা হতাশ।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...