বিজ্ঞাপন
একইসঙ্গে মামলার বাকি ছয় আসামিকে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রেখেছেন আদালত। সোমবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দিপ্তি। অন্যদিকে আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহাজাহান। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “মেজর সিনহা হত্যা মামলাটি দেশের অন্যতম আলোচিত ও সংবেদনশীল একটি মামলা। এ হত্যাকাণ্ড শুধু একটি ব্যক্তি নয়, গোটা সমাজের বিচার ও নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে এনেছে।”
মামলার রায় দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে গত ২১ এপ্রিল হাইকোর্টের এই বেঞ্চ গঠন করা হয়। ২৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয় আপিলের ওপর শুনানি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি তখন তথ্যচিত্র নির্মাণের কাজ করছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণ নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠে।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের ফাঁসি এবং পুলিশের তিন সদস্য ও তিন সোর্সকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় চার পুলিশ সদস্য ও তিন এপিবিএন সদস্যকে খালাস দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আকারে যায় এবং কারাগারে থাকা দণ্ডিতরা আপিল করেন। অবশেষে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বহাল রাখল।
এই রায়কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার ও আইনের শাসন রক্ষায় এই রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করছেন অনেকে।