Logo Logo
জাতীয়
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

দেশপ্রেমের মুখোশে ২৪০০ কোটি টাকার ডাকাতি! ফাঁস হলো এক ভয়ঙ্কর চিত্র!


Splash Image

ছবি: সংগৃহীত

দেশে ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ভাতা নিচ্ছেন বলে জানাল জামুকা। বছরে ব্যয় প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা। মাঠ পর্যায়ে শুনানি শুরু।


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা বিতর্ক ও অসঙ্গতি চলে আসছে। ১৯৯৪ সালে সরকারিভাবে প্রকাশিত তালিকায় যেখানে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার, সেখানে ২০২৪ সালে এসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জনে। এই সংখ্যার মধ্যে প্রায় ৯০ হাজার জনকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।

বর্তমানে প্রতি মুক্তিযোদ্ধা বছরে গড় হিসেবে পান প্রায় ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। এই হিসাবে, কেবল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনেই সরকারকে বছরে গুণতে হচ্ছে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি। জাতীয় অর্থনীতির জন্য এটি একটি বড় ধরনের চাপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জামুকার তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন। এদের মধ্যে ৮৯ হাজার ২৩৫ জন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত। বয়সের সীমাবদ্ধতা এবং যাচাই-বাছাইয়ে ব্যর্থতার কারণে গত ১৫ বছরে বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৯২৬টি গেজেট। এর মধ্যে ১২ বছর ৬ মাস বয়স পূরণ না হওয়ায় বাতিল হয়েছে ২ হাজার ১১১ জনের সনদ।

বর্তমানে একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতি মাসে পান ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা। সেই সঙ্গে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ১০ হাজার টাকা করে, স্বাধীনতা দিবসে ৫ হাজার এবং পহেলা বৈশাখে ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এসব ভাতা সব মিলিয়ে কোটি কোটি টাকার সরকারি ব্যয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সনাক্তে এবার মাঠে নামছে জামুকা। ঢাকায় বসে যাচাই না করে, এবার সরাসরি জেলার পর্যায়ে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার (২ জুন) কুমিল্লা সার্কিট হাউজে ৩১ জন সন্দেহভাজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে প্রথম দফার গণশুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, “একজন ব্যক্তি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কি না, তা কেবল দলিল-নথি দেখে নির্ধারণ করা যায় না। এজন্য মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় সাক্ষ্য, দলিল ও ইতিহাস নির্ভর প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এই উদ্যোগের পেছনে অনুপ্রেরণা ছিলেন ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক, যিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কার্যক্রম চালু করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে অভিযোগ গ্রহণ, যাচাই ও শুনানি এখন নতুন গতি পেয়েছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় রোধের আশায় রয়েছে সাধারণ জনগণ। তবে এটি কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করছে স্বচ্ছতা ও কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর।

-নিউজ ডেস্ক, এমএসএ।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা