ছবি: কুয়াকাটা
বিজ্ঞাপন
চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
গত কয়েক বছর ধরে ঈদের অন্তত পাঁচ থেকে সাত দিন আগেই কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেল-মোটেল পুরোপুরি বুক হয়ে যেত। পর্যটকদের আনাগোনায় সৈকতজুড়ে থাকত উৎসবের আমেজ। তবে এবার কুয়াকাটা যেন শুনশান – ফাঁকা পড়ে আছে সৈকত, পর্যটকবিহীন হোটেলগুলোতে নেই কর্মব্যস্ততা।
সৈকতের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সৌরভ জানান, “অন্য সময় ঈদের আগে অনেক পর্যটক আসতেন, বিক্রি হতো ভালো। কিন্তু এবার এখনো তেমন কাউকে দেখিনি। এভাবে চলতে থাকলে কিস্তির টাকা শোধ করাও কঠিন হয়ে পড়বে।”
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফরাজি বলেন, “বর্তমানে পর্যটক বলতে গেলে নেই। তবে ঈদ সামনে রেখে টানা ১০ দিনের ছুটি রয়েছে। কিছু ফোন বুকিং আসছে, শেষ মুহূর্তে হয়তো কিছুটা ভিড় বাড়তে পারে। হোটেল রাজমহলের পক্ষ থেকে আমরা ২০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিচ্ছি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে।”
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ জানান, “বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে হোটেল বুকিং ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেত। এবার তা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তবে শেষ সময়ে কিছুটা উন্নতির আশা করছি।”
পর্যটক না আসার কারণ হিসেবে কাঠামোগত কিছু সমস্যার কথাও তুলে ধরেছেন কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির। তিনি বলেন, “সি-বিচে ‘জিরো ব্যাগ’ ও ‘জিও টিউব’ ব্যবহারের ফলে সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যার পর পর্যটকদের জন্য বিনোদনের তেমন কোনো ব্যবস্থাও নেই। যদি এসব বিষয়কে গুরুত্ব না দেওয়া হয়, তাহলে কুয়াকাটা পর্যটন খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।”
ঈদের মতো বড় উৎসব সামনে থাকলেও কুয়াকাটার এমন পর্যটকশূন্যতা সংশ্লিষ্টদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এর প্রভাব পড়বে ব্যবসা ও স্থানীয় অর্থনীতির ওপরও। তবে শেষ মুহূর্তে ভিন্নচিত্রের আশায় এখনও আশাবাদী কুয়াকাটার পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
-জাকারিয়া জাহিদ, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি