Logo Logo
বাংলাদেশ

বরগুনায় ডেঙ্গুতে নারী উদ্যোক্তার মৃত্যু, হাসপাতালজুড়ে অব্যবস্থাপনার চিত্র


Splash Image

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আজমেরী মনালিসা খান নামের এক নারী উদ্যোক্তার।


বিজ্ঞাপন


তিনি বরগুনা-১ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদের ছোট মেয়ে। আজমেরীর মৃত্যু ঘিরে স্বাস্থ্যখাতের চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার চিত্র উঠে এসেছে।

পরিবারের অভিযোগ, সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়াই আজমেরীর মৃত্যুর মূল কারণ। তার বড় ভাই রাসেল খান জানান, “আমার বোন ও দুলাভাই দুজনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে সঠিক সময়ে চিকিৎসা মেলেনি। ডাক্তারের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। এটা সরাসরি চিকিৎসকদের অবহেলা। আমরা এর বিচার চাই।”

এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে স্থানীয় রোগী ও স্বজনদের বক্তব্যেও। অনেকেই বলছেন, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গেলে মানুষ রোগ সারিয়ে নয়, বরং নতুন রোগ নিয়ে ঘরে ফিরছে। কোথাও সঠিক চিকিৎসা নেই, আবার কোথাও রোগ প্রতিরোধের ন্যূনতম ব্যবস্থাও নেই।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা পৌরসভা ও গৌরিচন্না ইউনিয়ন বর্তমানে ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’। ইতোমধ্যে জেলায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে।

জানা যায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন। চিকিৎসক, স্যালাইন, ডেঙ্গু টেস্ট কিট, মশারি—সব কিছুরই তীব্র সংকট রয়েছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রোগীদের জন্য শয্যার অভাব, স্যালাইন নেই, এমনকি ডেঙ্গু পরীক্ষার সরঞ্জামও পর্যাপ্ত নয়। রোগীদের স্বজনরাই ওষুধ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করছেন। নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকদের পর্যাপ্ত সংখ্যাও নেই।

এদিকে বরগুনা পৌর এলাকা ও গৌরিচন্না ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, জমে থাকা পানিতে মশার উপদ্রব বাড়ছে। হাসপাতালের পাশের গণপূর্ত বিভাগের পরিত্যক্ত জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ও নোংরা ডোবা হয়ে উঠেছে মশার প্রজননস্থল।

বরগুনা স্বাস্থ্য অধিকার যুব ফোরামের কো-অর্ডিনেটর মহিউদ্দিন অপু বলেন, “আজমেরীর মৃত্যু ব্যক্তি বা পারিবারিক ক্ষতি নয়, এটি একটি বড় প্রশাসনিক ব্যর্থতা। আমরা আর কাউকে ডেঙ্গুতে হারাতে চাই না।”

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, “আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। তবে জনবল ও সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের দাবী—তড়িঘড়ি করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো, মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।

প্রতিবেদক - সফিকুল ইসলাম রাসেল, বরগুনা।

আরও পড়ুন

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি
উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ঈদের দিনে পরিচ্ছন্ন দেশের সব সিটি করপোরেশন
উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ঈদের দিনে পরিচ্ছন্ন দেশের সব সিটি করপোরেশন