ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তানে ভারতের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক এবং আহত হয়েছেন আরও ৪৬ জন। বুধবার (৭ মে) দেশটির আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করে।
আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী দাবি করেন, ভারত পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক স্থাপনা ও ধর্মীয় উপাসনালয়কে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে মোট ২৪টি বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট এলাকায়, যেখানে প্রাণ হারান ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে দুইজন মাত্র তিন বছর বয়সী শিশু, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। এ ঘটনায় আরও ৩৭ জন গুরুতর আহত হন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদের কাছে অবস্থিত বিলাল মসজিদেও একটি হামলা চালানো হয়। সেখানে নিহত হয়েছেন তিনজন, আহত হয়েছেন দুই শিশু—একজন ছেলে ও একজন মেয়ে। কোতলির আব্বাস মসজিদে হামলায় মারা যায় ১৬ বছরের এক কিশোরী ও ১৮ বছরের এক তরুণ। আহত হন এক নারী ও তার কিশোরী মেয়ে।
তবে শিয়ালকোট ও শাকরগড় এলাকায়ও হামলার চেষ্টা হয়, তবে সেখানে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শাকরগড়ের একটি ডিসপেনসারিতে আংশিক ক্ষয়ক্ষতির কথা নিশ্চিত করেছে আইএসপিআর।
এর বাইরে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সেনাদের গুলিতে আরও পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। হতাহতদের মধ্যে একজন ছিল মাত্র পাঁচ বছর বয়সী শিশু।
ব্রিফিংয়ে জেনারেল শরীফ বলেন, “ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে মসজিদ ও বেসামরিক বসতি লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে। এটি হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের চরমপন্থী মানসিকতার প্রকাশ, যা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত নিপীড়নের অংশ।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও উসকে দিতে পারে। বিশেষ করে ধর্মীয় স্থানে হামলার অভিযোগ বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিসরে আরও বিতর্কিত করে তুলতে পারে।
এই ঘটনার পর দুই দেশের সীমান্তজুড়ে উত্তেজনা চরমে, এবং সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। ইতোমধ্যে পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে বিষয়টি জানিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।