ভোরের বাণী
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
বিজ্ঞাপন
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত বিক্ষোভ ও সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার (১২ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেবে তদন্ত সংস্থা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, “আশা করছি, আগামী সোমবার তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার রিপোর্ট আমার কার্যালয়ে দাখিল করবে। এরপর আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) দাখিলের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
এরই মধ্যে চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই ঐ মামলায় ফরমাল চার্জ গঠন হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি আরও বলেন, “এই চার্জের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।”
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি, ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সময় আবেদন মঞ্জুর করে এ নির্দেশ দেন।
২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
জুলাই-আগস্টের ওই সহিংসতায় নিরস্ত্র ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ, অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার আন্দোলন দমন করতে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চালায়। ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলকে হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।
৫ আগস্ট ২০২৪, গণআন্দোলনের চাপে পড়ে শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং গণহত্যার বিচার শুরু করার উদ্যোগ নেয়।
এই মামলার অগ্রগতি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই পদক্ষেপ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।