ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
রোববার (২৫ মে) এই রায় ঘোষণা করেন আদালত। তবে মামলার বাকি চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন। এরপরই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তদন্তে উঠে আসে—রাজনীতির ছত্রচ্ছায়ায় পাপিয়া গড়ে তুলেছিলেন একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র, যার মাধ্যমে চলত বিপুল অর্থ পাচার, মাদক, অস্ত্র ও দেহব্যবসার মতো অপরাধ।
ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতে ছিল এই চক্রের সক্রিয় উপস্থিতি। অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব হোটেলে রাজনীতি, ক্ষমতা ও টাকার প্রভাবে বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম চালানো হতো। পাপিয়া নিজেই এসব কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিতেন বলে তদন্ত কর্মকর্তারা জানান।
অর্থ পাচার মামলার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। তবে এবারের রায়ে মূলত অর্থের উৎস, অবৈধ লেনদেন ও পাচারের দিকগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে পাপিয়া রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী কাজ করে আসছিলেন, যা দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
পাপিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার বিলাসবহুল জীবনযাপন, বিদেশে অর্থ পাঠানো, এবং রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি শক্ত বার্তা দেওয়া হলো বলে মনে করছেন অনেকে।
এই মামলার চারজন আসামি ছিলেন—তার স্বামী মফিজুর রহমানসহ আরও তিনজন। যদিও তারা আদালতে অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে খালাস পান।
এই রায় দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজনীতির ছত্রছায়ায় অপরাধ গড়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে নতুন করে ভাবনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।