ভোরের বাণী
ভোরের বাণী গ্রাফিক্স
বিজ্ঞাপন
টানা কয়েকদিনের সশস্ত্র উত্তেজনার পর অবশেষে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের সরকার ও সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক কূটনৈতিক অঙ্গনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক বিবৃতিতে বলেন, “পাকিস্তান সবসময় এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে কাজ করে এসেছে। তবে আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতার প্রশ্নে কখনোই আপস করিনি।” তিনি এই যুদ্ধবিরতিকে ‘প্রজ্ঞার পথ’ বলে আখ্যায়িত করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, পাকিস্তানের মিলিটারি অপারেশন্সের মহাপরিচালকের (DGMO) সঙ্গে ভারতের DGMO আজ দুপুরে একটি যৌথ আলোচনা করেন। সেখানেই দু’পক্ষ স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে আজ বিকেল ৫টা থেকে।
দুই দেশের সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য, এবং পরবর্তী আলোচনা আগামী ১২ মে অনুষ্ঠিত হবে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটি শুধু সাময়িক স্বস্তি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য একটি নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির পেছনে ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ-এ এক পোস্টে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ এক রাতের আলোচনা শেষে ভারত ও পাকিস্তান তাৎক্ষণিক ও পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।” তিনি দুই দেশের নেতৃত্বকে ‘অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা’ প্রদর্শনের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ লিখেন, “শান্তির পথ বেছে নেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের রাষ্ট্রনায়কত্ব প্রশংসনীয়।”
পূর্বে বহুবার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও কার্যকর বাস্তবায়নে ঘাটতি ছিল। তবে এবার বিশ্বশক্তির সরাসরি সম্পৃক্ততা এবং দুই দেশের সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের আলোচনার কারণে এটিকে অধিক কার্যকর এবং দীর্ঘস্থায়ী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্বের অন্যতম উত্তেজনাপূর্ণ এই উপমহাদেশে সামরিক সংঘাত থেকে সরে এসে কূটনৈতিক আলোচনার পথে দুই দেশের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।