ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলীয় কোটমালে এলাকায় তীর্থযাত্রী বহনকারী একটি বাস খাদে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ঘটে রোববার ভোরে, যখন তীর্থযাত্রীদের নিয়ে চলমান বাসটি একটি পাহাড়ি সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে যায়। দেশটির পুলিশ এএফপিকে জানিয়েছে, এটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর একটি।
বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাসটি তীর্থযাত্রী শহর কাতারাগামা থেকে কোটমালে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রায় ৭০ যাত্রী বহনকারী বাসটির ধারণক্ষমতা ছিল ৫০ জন, ফলে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় অন্ধকার ছিল এবং রাস্তার অবস্থাও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্ঘটনাটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঘটেছে নাকি চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন—এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “দুর্ঘটনায় ১৫ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের সবাইকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, দুর্ঘটনার শিকার যাত্রীদের বেশিরভাগই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং তীর্থযাত্রার উদ্দেশ্যেই যাত্রা করছিলেন। দুর্ঘটনাস্থলটি রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
শ্রীলঙ্কায় সড়ক দুর্ঘটনা একটি নিয়মিত ও দুঃখজনক বাস্তবতা। প্রতি বছর দেশটিতে প্রায় ৩,০০০ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। ২০০৫ সালে দেশটির পূর্বাঞ্চলে ট্রেনক্রসিং পার হওয়ার সময় বাস দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছিলেন। এবারের ঘটনাটি সেই ঘটনার পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
এ ধরনের দুর্ঘটনা শুধু শোক নয়, বরং নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও আবার সামনে এনে দিয়েছে। যানবাহনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, দুর্বল সড়ক অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এমন বিপর্যয় ঘটছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।