ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের জন্ম দেয়। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই তার প্রশাসনের তাৎক্ষণিক মধ্যস্থতার ফলে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি পারমাণবিক যুদ্ধ থামিয়েছি। আমার মনে হয়, এটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারত। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যেতে পারত।”
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত হস্তক্ষেপ করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করে। তার ভাষায়, “আমার প্রশাসন শনিবার দুই দেশের মধ্যে একটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি স্থাপন করেছে। আমি বিশ্বাস করি এটি স্থায়ী শান্তির দিকে বড় একটি পদক্ষেপ।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “যদি দেশ দুটি আলোচনা চালিয়ে যায়, তবে আমরা উভয়ের সঙ্গেই বাণিজ্য বাড়াতে প্রস্তুত। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে প্রচুর ব্যবসা করব, ভারতের সঙ্গেও তাই। ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে, পাকিস্তানের সঙ্গেও খুব শিগগির শুরু হবে।”
তিনি কূটনৈতিক সমাধানে অর্থনৈতিক চাপ কীভাবে ভূমিকা রেখেছে, তাও ব্যাখ্যা করেন। “আমরা বলেছিলাম, চলুন, যদি আপনারা শান্তি চান, আমরা আপনাদের সঙ্গে বাণিজ্য করব। আর যদি না চান, তবে কোনো বাণিজ্যই হবে না।”
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাতের বাস্তব ঝুঁকিকে ইঙ্গিত করে। একইসঙ্গে এটি অর্থনৈতিক কূটনীতিকে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করে।
ট্রাম্প তার প্রশাসনের সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, “আমি ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে তাদের অসামান্য ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলা হলে এর কঠিন জবাব দেওয়া হবে। সন্ত্রাসবাদ ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। ভারত সন্ত্রাসবাদকে কখনোই প্রশ্রয় দেবে না।”
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও পাল্টা বার্তায় জানান, ভারত-পাকিস্তান আলোচনার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ—কাশ্মীর, সন্ত্রাসবাদ এবং পানি। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি লঙ্ঘন করছে এবং সন্ত্রাসবাদে জড়িত।
বিশ্ব সম্প্রদায় এখন গভীর নজরে দক্ষিণ এশিয়ার এই অস্থির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। শান্তির পথে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা কতটা কার্যকর হয়, তা সময়ই বলে দেবে।