বিজ্ঞাপন
দুই যুগ আগে রাজধানীর রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের আনন্দঘন পরিবেশকে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল একটি নৃশংস বোমা হামলা। সেই ভয়াবহ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামির সাজা অবশেষে হাইকোর্টে এসে হ্রাস পেয়েছে। এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন এবং অপর ছয়জনের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন। ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য, হাইকোর্ট গত ৮ মে রায়ের প্রথমাংশ ঘোষণা করেছিল এবং আজ চূড়ান্ত রায় দেন।
সাজা পরিবর্তন পাওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, যার মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে, ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে মুফতি আব্দুল হান্নানের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি, কারণ তার ফাঁসি ২০১৭ সালে সিলেটের গ্রেনেড হামলা মামলায় কার্যকর হয়েছে। ফলে তার আপিল পরিসমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া, মামলায় আগে থেকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছয় আসামির মধ্যে একজন, শাহাদাতউল্লাহ জুয়েলের সাজা বহাল রাখা হয়েছে। অপর তিনজনের যাবজ্জীবন সাজার মেয়াদ কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। দুই আসামি মারা যাওয়ায় তাঁদের আপিলও পরিসমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রাজধানীর রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনকালে ভয়াবহ বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন প্রাণ হারান এবং পরে হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলাটি "রমনা বোমা হামলা মামলা" হিসেবে পরিচিতি পায়। ২০১৪ সালে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর আসামিরা নিয়মিত ও জেল আপিল দায়ের করেন। একাধিক শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।
এই মামলার রায়ের মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অবসান ঘটল। তবে হামলার শিকারদের পরিবার ও সচেতন নাগরিকরা রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।