ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ট্রোল, সমালোচনা ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে বাস হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় দায়িত্বে থাকা শিক্ষক এবিএম সাইফুল ইসলামের দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আইএফআইসি ব্যাংকের সৌজন্যে ১৬ মে (বৃহস্পতিবার) উদ্বোধন করা হয় বাসটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের ভুল বানান এবং আইএফআইসি ব্যাংকের নামের উপরে ‘স্পন্সরড’ শব্দটির ভুল লেখার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে, উদ্বোধনের সময় ভুল বানানের অংশটি পেছনের দিকে রেখে চাবি হস্তান্তর ও ফটোসেশন করা হয়।
৪৫ লাখ টাকার বাজেটে বাসটির আর্থিক লেনদেন, ডিজাইন, সিটিং কনফিগারেশন, বডির রং ইত্যাদি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন গাড়ি হস্তান্তর কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম। বাস প্রস্তুতির সময় তিনি বেশ কিছুদিন ঢাকায় অবস্থান করেন। এমন একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের বানান ভুল হওয়াকে অনেকেই “অমার্জনীয়” বলে অভিহিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের শিক্ষার্থী হামিদুর রহমান বলেন, “একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে এত বড় করে লেখা নাম কীভাবে ভুল হতে পারে? এটা কারও নজরে পড়লো না? এতদিন যা শিখলাম, সবই কি ভুল ছিল?”
মাস্টার্স শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি বলেন, “দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ভুল কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের ভুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান দাবি করছি।”
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবিএম সাইফুল ইসলাম বলেন, “নাম ভুল হওয়ার সম্পূর্ণ দায় আইএফআইসি ব্যাংকের। তারা যেভাবে নাম দিয়েছে, সেভাবেই লেখা হয়েছে। উদ্বোধনের আগে সময় না থাকার কারণে সংশোধন করা হয়নি।” তবে উদ্বোধনের সময় তড়িঘড়ি না করে সংশোধনের সুযোগ ছিল কি না—এমন প্রশ্নে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত সংশোধনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
অন্যদিকে, আইএফআইসি ব্যাংকের পটুয়াখালী পুরান বাজার শাখার ইনচার্জ মেহেদী হাসান এই বক্তব্য সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, “বাসের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় বাসটি পছন্দ করেছে, ব্যাংক অর্থ দিয়েছে। বাসে কী নাম বসবে, তা ব্যাংক কতৃপক্ষ ঠিক করবে না; এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনিটরিংয়ের বিষয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “থ্রিডি মডেল দেখানো হয়েছিল, যেখানে সব ঠিক ছিল। উদ্বোধনের আগে নামের ভুল জানানো হয়েছিল, যা মোটেও কাম্য নয়। নাম ঠিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বাস ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।”
উল্লেখ্য, এর আগেও এবিএম সাইফুল ইসলামের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় বিএনসিসির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন স্টল থেকে হারিয়ে যায়। এ সময় তিনি বিএনসিসির সদস্যদের ‘ফোনের প্রতি লোভ সামলাতে না পারার’ অভিযোগ এনে উচ্চবাচ্য করেন। এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
প্রতিবেদক-মেহেদি হাসান