ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের বিখ্যাত ব্রুকলিন ব্রিজে এক চাঞ্চল্যকর নৌদুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দুইজন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৯ জন। শনিবার (১৭ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে, যখন মেক্সিকান নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘কুয়াওতেমক’ ব্রিজের নিচ দিয়ে পার হওয়ার সময় মাস্তুলসহ ধাক্কা খায় ব্রিজের নিচের অংশে।
দুর্ঘটনার মুহূর্ত ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, জাহাজটির তিনটি বিশাল মাস্তুলের ওপরের অংশ ব্রিজের নিচের ডেকে সজোরে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের ফলে মাস্তুলগুলো ভেঙে পড়ে কিছু অংশ নদীতে এবং কিছু অংশ জাহাজের ডেকের ওপর পড়ে যায়। দৃশ্যগুলো ছিল ভয়ঙ্কর। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, “প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না কী দেখছি, পরে জুম করে দেখি একজন মানুষ মাস্তুলে ঝুলছেন। উদ্ধার করতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে।”
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, জাহাজে থাকা ১৯ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। দুর্ঘটনায় নিহত দু’জনও ছিলেন ওই জাহাজে কর্মরত।
দুর্ঘটনার পর মেক্সিকান নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ‘কুয়াওতেমক’ জাহাজটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এটি আর চলার উপযোগী নেই। এই প্রশিক্ষণ জাহাজটি প্রায় ২৯৭ ফুট দীর্ঘ ও ৪০ ফুট চওড়া। এটি নৌ-অ্যাকাডেমির ক্যাডেটদের জন্য নির্ধারিত একটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ সফরের অংশ ছিল। চলতি বছর ৬ এপ্রিল মেক্সিকোর আকাপুলকো বন্দর থেকে ২৭৭ জন নাবিক ও ক্যাডেট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল জাহাজটি।
এই দীর্ঘ সমুদ্র অভিযানে জাহাজটির ১৫টি দেশের ২২টি বন্দরে ভিড়ার কথা ছিল, যার মধ্যে ছিল জামাইকার কিংস্টন, কিউবার হাভানা, মেক্সিকোর কোজুমেল এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিও। মোট ২৫৪ দিনের যাত্রার মধ্যে ১৭০ দিন সমুদ্রে থাকার পরিকল্পনা ছিল।
মেক্সিকান নৌবাহিনী আরও জানায়, “এই দুর্ঘটনার পরও আমরা আমাদের নাবিকদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এই দুর্ঘটনা সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলছে, বিশেষত শহুরে অবকাঠামো ঘেঁষে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে পরিকল্পনার যথাযথতা নিয়ে।