ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসনে সহায়তার অভিযোগে ভারতের একাধিক ভ্রমণ সংস্থার মালিক, প্রধান নির্বাহী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। সোমবার (তারিখ অনির্দিষ্ট) এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এসব ভারতীয় ট্রাভেল এজেন্সি ‘সচেতনভাবে’ অবৈধ অভিবাসনে সহযোগিতা করে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্য অনুযায়ী, “ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো কনসুলার অ্যাফেয়ার্স ও ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতিদিন অবৈধ অভিবাসন, মানবপাচার এবং সংশ্লিষ্ট চক্র শনাক্তে কাজ করছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ভারতীয় এসব ভ্রমণ সংস্থার কিছু কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ প্রবেশের জন্য ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছেন। এ কারণেই তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।”
এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ‘আইনের শাসন’ প্রতিষ্ঠা ও নাগরিক সুরক্ষার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের অভিবাসন নীতি শুধু অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতেই নয়, বরং যারা এই নীতিমালা লঙ্ঘন করে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্যও। এদের মধ্যে আছে ভ্রমণ সংস্থাগুলোর মধ্যস্থতাকারীরাও।”
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু ঐসব কর্মকর্তাদের জন্যই নয়, যারা সাধারণত ‘ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম’-এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতেন, তারাও এর আওতায় পড়বেন। অর্থাৎ, নিষেধাজ্ঞার বিস্তৃতি বেশ ব্যাপক এবং এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেও নজর কেড়েছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত বহু ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিছু ঘটনায় তাদের হাতে-পায়ে রশি বেঁধে বিমানে তুলে দেশে পাঠানোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এই পরিস্থিতির মধ্যে নতুন করে এমন নিষেধাজ্ঞা মার্কিন প্রশাসনের কঠোর অবস্থানেরই প্রতিফলন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অভিবাসন নীতিতে রক্ষণশীল ও কড়া অবস্থান নিয়ে চলেছেন। এই পদক্ষেপ তার সরকারের অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নীতির ধারাবাহিক প্রয়োগ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বার্তা পাঠাবে যে, যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ অভিবাসন নিয়ে কোনোভাবেই ছাড় দেবে না।