ভোরের বাণী
ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপটা ছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার জন্য এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। নিজের একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে এনে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ শিরোপা। কিন্তু ওই বিশ্বকাপে আরেকজনের নামও অম্লান হয়ে আছে—ইংলিশ স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকার, যিনি হয়েছিলেন আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম নিখুঁত স্ট্রাইকার, পরবর্তীকালে যিনি হয়ে ওঠেন একজন প্রভাবশালী ক্রীড়া বিশ্লেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক।
লিনেকার ২৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের জাতীয় গণমাধ্যম বিবিসি’র জনপ্রিয় ফুটবলভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ সঞ্চালনা করেছেন। তবে সম্প্রতি তিনি এক ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন—ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করায় বিতর্কের কেন্দ্রে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত বিবিসি থেকে ছাঁটাই হন এই কিংবদন্তি।
৬৪ বছর বয়সী লিনেকার সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে একটি ছবি শেয়ার করেন। পরে তিনি সেটি মুছে ফেলেন এবং জানান, ছবিটিতে অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি প্রতীক ছিল, যার সঙ্গে অতীতে ইহুদি-বিরোধী ধারণা জড়িয়ে ছিল। যদিও তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন, তবু বিষয়টি ঠেকাতে পারেনি বিবিসির সিদ্ধান্ত।
গ্যারি লিনেকারের সঙ্গে বিবিসির চুক্তি ছিল ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে ২০২৪-২৫ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ ম্যাচডে’র পরেই বিবিসি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, তারা লিনেকারের সঙ্গে আর কাজ করছে না। এ সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছেন লিনেকারের সহকর্মী, ভক্ত, এমনকি সাবেক খেলোয়াড়রাও।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #IStandWithGary ও #FreeSpeechMatters হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে কোটি ভক্ত লিনেকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। সাবেক খেলোয়াড়, সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনরা বলেছেন—এটি কণ্ঠরোধের এক নগ্ন প্রচেষ্টা, যা পশ্চিমা গণমাধ্যমে একটি ‘আতঙ্কজনক প্রবণতার’ ইঙ্গিত দেয়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটি শুধু লিনেকারের ঘটনা নয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সাংবাদিক, শিক্ষক, এমনকি বিনোদন অঙ্গনের ব্যক্তিদেরও চাকরি হারাতে হচ্ছে ফিলিস্তিনপন্থী মতামতের কারণে।