ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
'সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫' নামে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে রহিত হয়েছে পুরনো সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩।
রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত গেজেটের মাধ্যমে এই অধ্যাদেশটি প্রকাশিত হয়। এ অধ্যাদেশের লক্ষ্য—সাইবার অপরাধ শনাক্ত, প্রতিরোধ, দমন এবং বিচারিক কাঠামো শক্তিশালী করা।
অধ্যাদেশের দ্বিতীয় অধ্যায়ে সরকারকে একটি 'জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি' গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একজন মহাপরিচালক এবং নির্ধারিত সংখ্যক পরিচালক নিয়ে গঠিত এই সংস্থার প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। তবে প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্থানে এর শাখা খোলা যাবে।
অধ্যাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ‘জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিল’ গঠন। যার চেয়ারম্যান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টা। এই কাউন্সিলে শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, বিচার বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংক, টেলিযোগাযোগ কমিশন এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এই কাউন্সিল এজেন্সিকে নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করবে এবং কার্যক্রম মনিটর করবে।
অধ্যাদেশের ষষ্ঠ ও সপ্তম অধ্যায়ে সাইবার অপরাধ ও তার শাস্তি এবং বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত বিধান রাখা হয়েছে। এটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে, ডিজিটাল অপরাধের ক্ষেত্রে আইনি কাঠামো কঠোর হবে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হবে।
অষ্টম অধ্যায়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। নবম অধ্যায়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যাতে সময়োপযোগী আইনি হস্তক্ষেপ সম্ভব হয়।
এই অধ্যাদেশ অনুসারে, সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্ভরযোগ্য ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। তবে আইনগতভাবে বাংলা পাঠকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ডিজিটালাইজেশনের ফলে সাইবার হুমকি ও ডিজিটাল অপরাধ বেড়েছে বহুগুণ। ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস, ডিজিটাল প্রতারণা, সরকারি ওয়েবসাইটে হামলা ইত্যাদি ঠেকাতে কার্যকর আইনি কাঠামোর দাবি দীর্ঘদিনের। এই নতুন অধ্যাদেশ সেই প্রেক্ষাপটেই এক সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।