বিজ্ঞাপন
মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রশাসনের অভিযান চলমান থাকলেও, জেলার বিভিন্ন নদীতে কিছু মৌসুমী জেলে এখনও প্রকাশ্যে ইলিশ শিকার করছে— এমন অভিযোগ এসেছে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা জেলেদের কাছ থেকেই।
জানা গেছে, গত ১৭ দিনে ২৪১টি টিম অংশ নিয়ে ৮৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে প্রশাসন। এসব অভিযানে ২৫টি মামলা দায়ের, ২১ জন জেলেকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ৩৬৭ কেজি ইলিশ, যা এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ৮৬ হাজার ৭২০ মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। তবে জেলে সমিতির অনেকেই বলছেন, এসব অভিযানের কৃতিত্ব মূলত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের। তাদের অভিযোগ— জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল ও সহকারী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নয়ন মজুমদারের যোগসাজশে কিছু মৌসুমী জেলে প্রকাশ্যে মা ইলিশ শিকার করছে। প্রশাসনের টহল নৌযান অনেক সময় ঘাটেই বাধা থাকে, আবার কখনও নদীতে ঘুরে চলে এলেও শিকাররত জেলেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
জেলার ২৪৮ কিলোমিটার নদীপথের মধ্যে সুগন্ধা, বিষখালী ও হলতা নদীতে ইলিশের বিচরণ সবচেয়ে বেশি। এসব নদীতেই গোপনে চলছে মা ইলিশ শিকার। অভিযোগের বিষয়ে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা মৌরি বলেন, “নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
অভিযোগ স্বীকার করে সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা নয়ন মজুমদার বলেন, “কাজ করলে মানুষ সমালোচনা করবেই। আমি যদি জেলা মৎস্য কর্মকর্তার মতো ১৬–১৭ দিন বসে সময় কাটাতাম, তাহলে হয়তো অভিযোগ আসত না।” রিপোর্ট ঠিক আছে সেটা নিয়ে আমি কোন কথা বলতে চাই না তবে যারা মূল যাদের মনিটরিং করার কথা আমরা তো ফিল্ডে কাজ করি সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা হিসাবে যতটুকু করি সে গুলো আমার করা উচিত না। কিন্তু সদর উপজেলা কর্মকর্তা একলা এবং তার নলছিটি উপজেলায় দায়িত্ব তাকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য নদীতে থাকতে হয়। এরকম অভিযোগ তো ভুঁড়ি ভুঁড়ি আসবে।
অন্যদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। আমরা মা ইলিশ রক্ষায় প্রতিদিন নদীতে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।” মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও মৎস্য বিভাগ সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে। জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের অভিযান নিষেধাজ্ঞার শেষ দিন পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...