বিজ্ঞাপন
সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী এই নদীটি দীর্ঘদিন ধরেই একটি প্রভাবশালী 'বালুখেকো' চক্রের কবলে ছিল। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সরেজমিনে যাদুকাটা নদী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। সপ্তাহখানেক আগেও যেখানে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের তাণ্ডব চলছিল, সেখানে এখন বিজিবির ২৪ ঘণ্টার টহল জোরদার রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এই চক্রটি সরকারি খাসজমি দখল করে বালুখেকোদের কাছে বিক্রি করতো। ফলে নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু লুট করায় তীরবর্তী গ্রামগুলো شدید ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছিল।
বিজিবির প্রস্তাবনায় এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গঠিত টাস্কফোর্স গত এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। ফলে যাদুকাটা নদীর ইজারাবহির্ভূত এলাকায় এখন আর বোমা মেশিন বা ড্রেজার দিয়ে পাড় কাটার দৃশ্য চোখে পড়ছে না। বিজিবি ক্যাম্পে জনবল বৃদ্ধি করে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর ফলে নদীর স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ ফিরতে শুরু করেছে।
যাদুকাটা নদী কেবল খনিজ সম্পদের জন্যই নয়, এটি সিলেটের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্রও বটে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বারিকটিলা, শিমুলবাগান এবং ৩৬০ আউলিয়ার পুণ্যভূমি হিসেবে খ্যাত এই অঞ্চলে হযরত শাহ আরেফিনের (রহ.) মাজার এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর বাড়িসহ कई গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। বিজিবির এই পদক্ষেপে নদীপাড়ের পাশাপাশি এসব পর্যটন স্পট ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোও সুরক্ষিত হয়েছে।
এ বিষয়ে ২৮ বিজিবি, সুনামগঞ্জের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, "ভবিষ্যতে কেউ নিয়ম ভেঙে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে সিভিল প্রশাসন ও জনসাধারনকে সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।" তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, "অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে বিজিবিকে ২৪ ঘণ্টা নিয়োজিত থাকতে হলে সীমান্ত সুরক্ষা, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধের মতো মূল দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে।" তিনি পরিবেশ ও স্থাপনা রক্ষায় প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ ও সুশীল সমাজের সহযোগিতা কামনা করেন।
এলাকাবাসীর দাবি, বর্তমান স্থিতিশীল অবস্থা যেন বজায় থাকে এবং বৈধ ইজারাদাররা যেন নিয়ম মেনে শুধুমাত্র নদীর গভীর থেকে সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করেন। এই কার্যকর পদক্ষেপের ফলে যে স্বস্তি ফিরে এসেছে, তা ধরে রাখার জন্য তারা সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...