ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় আয়োজিত এ উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ প্রাঙ্গণে। সকাল ১০টায় কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের সূচনা করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এক বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে দিয়েছে বিশ্বমঞ্চে সম্মানজনক অবস্থান। পূর্ববঙ্গের প্রকৃতি, মাটি ও মানুষের সঙ্গে কবিগুরুর হৃদ্যতা তাঁর সাহিত্যিক জীবনদর্শনের অন্যতম ভিত্তি। কবিগুরুর চিন্তা-চেতনা ও আদর্শ শুধু সাহিত্য নয়, সমাজ, রাজনীতি ও মানবতার প্রতিটি স্তরে প্রাসঙ্গিক এবং পথপ্রদর্শক। এই প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
উৎসবের প্রথম দিনে অ্যাকাডেমিক ভবন-১ ও ৩-এ অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রবীন্দ্রসংগীত ও রবীন্দ্রনাথ-সম্পর্কিত উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা। এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শুরু হয় প্রাণবন্ত ‘তারুণ্য মেলা’, যার উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক জনাব মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। উদ্বোধনের পর তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মেলার উদ্বোধন শেষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) জনাব নজরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন তারুণ্য মেলা উপকমিটির আহ্বায়ক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান জান্নাতুল মাওয়া মুন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান এবং বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মাইনুল ইসলাম।
বিকেল ৪টায় আয়োজিত সেমিনারে “রবীন্দ্রনাথের পরিবেশ চিন্তা” বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জাবেদ ইকবাল।
প্রথম দিনের সমাপ্তি ঘটে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার মধ্য দিয়ে, যেখানে অংশ নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে রবীন্দ্র ভাবনা ও শিল্পচেতনার গভীর স্পর্শ।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে রয়েছে আরও নানা আয়োজন—তারুণ্য মেলার দ্বিতীয় ধাপ, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, সেমিনার, সুধী সমাবেশ, সমাপনী অনুষ্ঠান এবং চূড়ান্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা “রবীন্দ্র জন্মোৎসব-১৪৩২” উদযাপনকে পরিপূর্ণতা দেবে।
প্রতিবেদক-মো. হাফিজ