ভোরের বাণী
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহিত
বিজ্ঞাপন
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেছেন, উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।
রবিবার (৪ মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এসব কথা জানান।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, “গত ১৮ দিন ধরে আমরা শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। দাবি ও অবস্থান স্পষ্ট, কিন্তু উপাচার্য আমাদের সঙ্গে একবারের জন্যও আলোচনা করতে এগিয়ে আসেননি। এটি শুধু অবহেলা নয়, বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রত্যাখ্যান করা। বিশ্ববিদ্যালয় একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, এখানে স্বৈরাচারী মানসিকতার কোনো স্থান নেই।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বারবার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছি। এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি, ইউজিসি বা শিক্ষা উপদেষ্টা যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেন, তবে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। আমরা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চাই না, কিন্তু যদি আমাদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হয়, তবে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই হবে আমাদের পথ।”
তিনি অভিযোগ করেন, “যৌক্তিক আন্দোলনের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে দফায় দফায় মামলা-জিডি করা হয়েছে। অথচ, যাঁরা স্বৈরাচারের দোসর, তাঁদেরকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত এক শিক্ষার্থীর আবেদন পাঁচ মাসেও খোলা হয়নি।”
এর আগে, রবিবার সকাল ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল জরুরি সিন্ডিকেট সভা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী।”
তিনি আরও জানান, “যদি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা মুচলেকা দেন, তাহলে প্রশাসনের করা মামলা ও সাধারণ ডায়েরি থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।”
তবে উপাচার্যের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, “তিন সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা ন্যায্য দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। উপাচার্য চাইলে বহুবার আলোচনায় বসতে পারতেন। কিন্তু তিনি কখনো সে উদ্যোগ নেননি। আমরা আর আলোচনায় যাব না। এখন সময় এসেছে তিনি বাস্তবতা মেনে নেবেন।”
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নাজমুল ঢালি বলেন, “উপাচার্যের কাছে বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি জানানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। নয় মাস দায়িত্বে থেকেও দৃশ্যমান কোনো কাজ করতে পারেননি। উল্টো যেসব শিক্ষক-কর্মকর্তা স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করেন, তাঁদের উচ্চ পদে বসিয়েছেন। তাই আমরা মনে করি, এই উপাচার্য আমাদের উপযুক্ত নন। আমরা তাঁর পদত্যাগ চাই।”