ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীরা চরম আবাসন সংকট, শ্রেণিকক্ষের অভাব, পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকা, ল্যাব ও গ্রন্থাগারের সরঞ্জামের ঘাটতির মতো সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছেন। অথচ উচ্চশিক্ষার অন্যতম কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় সংকট এখন ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন। প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চারটি আবাসিক হলে জায়গা হয়েছে মাত্র ২ হাজারের মতো শিক্ষার্থীর। ফলে বাকি শিক্ষার্থীদের নিরুপায় হয়ে বাইরে ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক চাপও বেড়ে যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সংলগ্ন বাসাগুলোর ভাড়া আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। যেখানে বরিশাল শহরে গড়ে প্রতি ফ্ল্যাটের ভাড়া ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এক কক্ষের রুমের ভাড়া দাবী করা হয় ৪-৫ হাজার টাকা। পুরো ফ্ল্যাটের ভাড়া গড়ে দাঁড়ায় ৭ থেকে ৯ হাজার টাকায়। অনেক সময় বাড়িওয়ালারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসহযোগিতাও করেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত ভাড়া গুনে আবাসনের ব্যবস্থা করতে গিয়ে পড়াশোনার খরচ বহন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল রহমান অনিক বলেন, "হলে এক রুমে ৮ জন করে থাকতে হয়, এক বেডে দু’জন। এতে ব্যক্তিগত পরিসর তো থাকে না-ই, পড়াশোনার পরিবেশও নষ্ট হয়।"
হলের ধারণক্ষমতার বেশি শিক্ষার্থী রাখার অভিযোগ আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বারবার এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। ছাত্রদের জন্য থাকা দুটি পাঁচতলা ভবনে প্রতি কক্ষে ৮ জন এবং একটি বেডে ২ জন করে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। ছাত্রীদের জন্যও পাঁচ ও ছয়তলা দুটি হল থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণতা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে দ্রুত আবাসন সংকট সমাধান, শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাবরেটরি উন্নয়ন, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবি উঠেছে সচেতন মহল থেকে। দীর্ঘ ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এসব মৌলিক চাহিদার অপূর্ণতা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।
প্রতিবেদক - মোঃ আশিকুল ইসলাম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।