ফারুক আহমেদ। ফাইল ছবি
বিজ্ঞাপন
যেখানে সরকারের অনাস্থা,পরিচালকদের বিদ্রোহ এবং রাতারাতি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের হস্তক্ষেপে এক সভাপতির চেয়ার খালি হয়ে যায়।
২৯ মে সকাল থেকেই গুঞ্জন ছিল তুঙ্গে। এর আগের রাতেই ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া ব্যক্তিগতভাবে ফারুক আহমেদকে জানান যে, তাকে আর সরকারের পছন্দ নয়। সেই আলোচনার রেশ না কাটতেই বৃহস্পতিবার রাতে বিসিবির আট পরিচালক (আকরাম খান ব্যতীত) ফারুকের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিক অনাস্থা জানান।
পরিস্থিতি এতটাই দ্রুত গতিতে এগোয় যে, রাত ১১টার আগেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়, বিসিবি পরিচালক হিসেবে ফারুকের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, তার বিসিবিতে থাকার আর কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি নেই। স্বাভাবিকভাবেই, তিনি সভাপতি পদও হারান।
তবে ফারুক আহমেদ এই ঘটনাকে কোনোভাবেই মেনে নিচ্ছেন না। রাত পৌনে ১২টার দিকে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আমি আনচ্যালেঞ্জড যেতে দেবো না। ফাইট করে যাবো। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়বো।”
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সভাপতি জয় শাহকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, আইসিসির অন্তত ৫ থেকে ৭ জন পরিচালকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন ফারুক। তার দাবি, “আমাকে অন্যায়ভাবে জোর করে সরানো হয়েছে, আর আমি আইসিসিকে জানিয়েছি—তারা অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে।”
ফারুক উদাহরণ টানেন শ্রীলঙ্কার, যেখানে ২০২৩ সালে সরকারের হস্তক্ষেপে ক্রিকেট বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। তখন আইসিসি কড়া অবস্থান নিয়ে ওই বোর্ডকে পুনর্বহাল করে। ফারুক বিশ্বাস করেন, তার ক্ষেত্রেও আইসিসি তৎপর হবে এবং খুব দ্রুত বিসিবিতে এ বিষয়ে আইসিসির চিঠি পৌঁছাবে।
তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। আইসিসি সাধারণত সদস্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে না, তবে সরকারি হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে তারা কড়া অবস্থান নেয়—যা শ্রীলঙ্কা, নেপালের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। এখন প্রশ্ন হলো, ফারুকের অভিযোগ কি সেই মাত্রায় পৌঁছাবে যেখানে আইসিসি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে?
দেশের ক্রিকেট অঙ্গন এবং সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন তাকিয়ে আছে—এই দ্বন্দ্বের জল কতদূর গড়ায়।