Logo Logo
আবহাওয়া

বেরিবাঁধ ভেঙে ৬ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ৫ হাজার মানুষ


Splash Image

ছবি- গ্রাম প্লাবিত

বরগুনার পাথরঘাটায় হলতা নদীর বেরিবাঁধ ভেঙে ৬টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, ফসল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।


বিজ্ঞাপন


বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মানিকখালী এলাকায় হলতা নদীর বেরিবাঁধ ভেঙে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে বুধবার রাতে বাঁধটি ভেঙে যায়। ফলে অন্তত ছয়টি গ্রাম—মানিকখালী, নাচনাপাড়া, জ্ঞানপাড়া, উত্তর কাঠালতলী, কেরামতপুর ও পুটিমারা প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রবল জোয়ারের চাপ ও টানা বৃষ্টির ফলে মানিকখালী ও বাজারসংলগ্ন এলাকার বেরিবাঁধটি ভেঙে যায়। হঠাৎ করে পানি ঢুকে পড়ে বহু ঘরবাড়ি, রান্নাঘর, পুকুর ও খেতের মধ্যে। রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকে শুকনো খাবার খেয়ে রাত পার করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ভাষ্যমতে, প্লাবনে পুকুরের মাছ ভেসে গেছে এবং ধানসহ অন্যান্য ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে তাদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, গত বছরের আগস্ট মাসে জ্ঞানপাড়া এলাকার কিছু বাসিন্দা নিজেরাই পানির সংকট দূর করতে বাঁধের একটি অংশ কাটেন। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ বিষয়ে টেন্ডার আহ্বান করে এবং রাজু মিয়া নামে এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ প্রদান করে। কিছুদিন কাজ চললেও অজ্ঞাত কারণে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই তারা সরে যায়। সেই অপূর্ণ মেরামতের অংশ থেকেই এবার বর্ষার শুরুতে বাঁধটি ভেঙে পড়ে।

নাচনাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন পান্না বলেন, "ঠিকাদারের গাফিলতির কারণেই আমরা এই দুর্যোগের শিকার হয়েছি।"

এদিকে, এই বেরিবাঁধ দিয়ে তিনটি ইউনিয়নের শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করত। বেরিবাঁধ ধসে পড়ায় পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাই এখন বিপর্যস্ত। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আখতারুজ্জামান খান জানান, "এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।"

বাঁধ ভাঙার বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান জানান, "বাঁধ ভাঙার খবর পেয়েই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। বৃষ্টি কমলেই তারা সরেজমিনে এসে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।"

স্থানীয়রা বলছেন, এ অবস্থায় দ্রুত বাঁধ পুনঃনির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের পদক্ষেপ নেওয়া না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

প্রতিবেদক- ইব্রাহীম খলীল,পাথরঘাটা।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা