ছবি: কোরবানি পশু
বিজ্ঞাপন
অনেক সময় অজ্ঞতাবশত এমন পশু কোরবানি করা হয়, যেগুলোর শরীরে শরীয়তে নিষিদ্ধ বা অপছন্দনীয় ত্রুটি বিদ্যমান থাকে। ফলে কোরবানি অগ্রহণযোগ্য বা অপ্রশংসনীয় হয়ে পড়ে।
কোরবানিযোগ্য পশুর ধরন
ইসলামী বিধান অনুযায়ী নিচের ছয় ধরনের গৃহপালিত পশু কোরবানির জন্য বৈধ:
উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা
তবে শর্ত হচ্ছে—এই পশুগুলো যেন সুস্থ, সবল ও ত্রুটিমুক্ত হয়।
যেসব পশু দিয়ে কোরবানি সহি হবে না
হাদিসে চারটি বিশেষ দৃষ্টিগোচর ত্রুটি থাকা পশু দিয়ে কোরবানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হজরত বারা ইবনে আজেব (রা.)-এর সূত্রে নবিজি (সা.) বলেছেন—
“চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি বৈধ নয়:
১. যেসব পশুর চোখে পরিষ্কার অন্ধত্ব রয়েছে
২. গুরুতর অসুস্থ পশু
৩. চলাচলে অসমর্থ—অর্থাৎ স্পষ্ট খোঁড়া
৪. অতিমাত্রায় দুর্বল—যার শরীরে হাড়-মজ্জা ছাড়া কিছুই নেই”
(সূত্র: নাসাঈ)
যেসব পশু কোরবানিযোগ্য হলেও মাকরূহ (অপছন্দনীয়)
কিছু পশু রয়েছে যেগুলোর ত্রুটি বড় না হলেও শরিয়তের দৃষ্টিতে অপ্রশংসনীয় বলে বিবেচিত। উদাহরণস্বরূপ—
ভাঙা শিং, কাটা কান, লেজের অর্ধেক বা পুরোটা না থাকা, জন্মগতভাবে পুরুষত্বহীন (কামন) পশু
এমন পশু দিয়ে কোরবানি দিলে তা শরিয়তসম্মত হলেও সাওয়াব হ্রাস পায়। এজন্য এসব পশু পরিহার করাই উত্তম।
সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ত্রুটির দৃষ্টান্ত
নবিজি (সা.) আরও কিছু বিশেষ ত্রুটি যুক্ত পশু দিয়ে কোরবানি নিষিদ্ধ করেছেন। নিচে কয়েকটি ত্রুটির উদাহরণ দেওয়া হলো:
ত্রুটির নাম বিবরণ
মুকাবালা কানের একদিক সম্পূর্ণ কাটা
মুদাবারা কান গোড়া থেকে কাটা
খারকা কানে ফুটো বা ছিদ্র
শারকা ফাটা কান
আযবা অর্ধেক বা তার বেশি শিং ভাঙা
(সূত্র: নাসাঈ)
বন্য ও হিংস্র প্রাণী
বন্য বা হিংস্র জন্তুকে কোরবানির পশু হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।
উদাহরণস্বরূপ, হরিণের মাংস খাওয়া হালাল হলেও তা দিয়ে কোরবানি করা বৈধ নয়।
নবিজি (সা.)-এর সতর্কবার্তা
হজরত আলি (রা.) বলেন,
“নবিজি (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান ভালোভাবে পরীক্ষা করে নেওয়ার জন্য—যাতে এসব অঙ্গে কোনো দৃষ্টিগোচর ত্রুটি না থাকে।”
(সূত্র: নাসাঈ)
কোরবানি শুধু একটি পশু জবাইয়ের নাম নয়—এটি আত্মত্যাগ, আনুগত্য ও খাঁটি ঈমানের বহিঃপ্রকাশ। তাই কোরবানির পশু বাছাইয়ের সময় হাদিস ও শরিয়তের দিকনির্দেশনা মেনে চলাই প্রকৃত তাকওয়ার পরিচয়।
-নিউজ ডেস্ক