বিজ্ঞাপন
তবে ঈদের এই পবিত্র দিনে কিছু নিয়ম-কানুন ও সামাজিক দিকনির্দেশনা মানা না হলে তা হতে পারে বিরূপ প্রভাবের কারণ।
চলুন জেনে নিই কোরবানির দিনে কী কী বিষয় মেনে চলা উচিত এবং কোন কাজগুলো থেকে বিরত থাকা ভালো—
করণীয় বিষয়সমূহ:
১. ঈদের নামাজের আগে কিছু না খাওয়া
ইসলামি রীতিতে ঈদুল আজহার সকালে নামাজের আগে না খাওয়াকে সুন্নাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নামাজের পর কোরবানির মাংস দিয়ে দিন শুরু করাই উত্তম।
২. সুন্নাহ মোতাবেক কোরবানি সম্পন্ন করা
পশুকে কিবলামুখী করে জবাই করা, ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলা, ধারালো ছুরি ব্যবহার এবং পশুর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়াই ইসলামী নিয়ম।
৩. মাংস সঠিকভাবে বণ্টন করা
কোরবানির মাংস তিন ভাগ করে—নিজের জন্য, আত্মীয়স্বজনের জন্য এবং গরিবদের জন্য—বণ্টন করা সুন্নাহ এবং সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
৪. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
জবাইয়ের স্থান ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা, রক্ত ও বর্জ্য যথাযথভাবে সরিয়ে ফেলা নাগরিক দায়িত্ব। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলাও জরুরি।
৫. তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা
৯ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ আসরের নামাজ পর্যন্ত তাকবির বলা ওয়াজিব। এটি ঈদের ধর্মীয় অনুভূতিকে গভীর করে তোলে।
বর্জনীয় বিষয়সমূহ:
১. পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখানো
জবাইয়ের আগে বা পরে পশুকে অপ্রয়োজনীয় কষ্ট দেওয়া ইসলামি দৃষ্টিকোণে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
২. দেখনদারি ও অপচয়
লোক দেখানোর জন্য অতিরিক্ত খরচ বা খাবারের অপচয় ইসলাম সমর্থন করে না। কোরবানি যেন হয় একান্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে।
৩. অদক্ষ কসাই দ্বারা জবাই করানো
অভিজ্ঞতা না থাকা কারও হাতে জবাই করালে দুর্ঘটনা হতে পারে। তাছাড়া পশুকে অনুচিত কষ্টও হতে পারে।
৪. শিশুদের জবাইয়ের দৃশ্য দেখানো
শিশুদের সংবেদনশীল মন এই দৃশ্য মানসিকভাবে প্রভাবিত হতে পারে, তাই তারা যেন নিরাপদ দূরত্বে থাকে।
৫. বর্জ্য অপসারণে অবহেলা করা
পশুর বর্জ্য রাস্তাঘাট বা খোলা জায়গায় ফেলে রাখা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্যসচেতন মহল বলছে—ঈদের আনন্দ পূর্ণতা পায় তখনই, যখন ধর্মীয় নির্দেশনা ও নাগরিক শৃঙ্খলা একসঙ্গে বজায় রাখা হয়। সামান্য অসতর্কতা ডেকে আনতে পারে জনস্বাস্থ্য সংকট বা পরিবেশ দূষণ।
তাই আসুন, এবারের ঈদ হোক পরিচ্ছন্নতা, ত্যাগ আর মানবিকতার উৎসব।