বিজ্ঞাপন
ভোরের সূর্যোদয়ের পর থেকেই আরাফার ময়দানে হাজিরা একত্রিত হচ্ছেন, যেখানে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। এখান থেকেই শুরু হয় হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ — মাফকুরা, আত্মশুদ্ধি ও খোদাভীতির সর্বোচ্চ প্রকাশ।
আরাফার ময়দান মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। হজযাত্রীরা এখানে জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন এবং হজের খুতবা শুনবেন, যা দেওয়া হবে মসজিদে নামিরা থেকে। সূর্যাস্তের পর তারা প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে রাত যাপন করবেন এবং শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
সৌদি আরবের হজমন্ত্রী তৌফিক রাবিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর হজ পালনের জন্য বিদেশ থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ লাখ হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। হজ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি কর্মী। রয়েছে ৪০টিরও বেশি সরকারি সংস্থার সমন্বিত কার্যক্রম, যা এবারের সম্ভাব্য তাপপ্রবাহ মোকাবেলায় সহায়ক হবে।
বিশেষ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাও গ্রহণ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ:
৫০ হাজার বর্গমিটার ছায়াযুক্ত এলাকা তৈরি
৪০০টির বেশি শীতলীকরণ ইউনিট
হাজার হাজার চিকিৎসাকর্মীর প্রস্তুতি
অবৈধ হজ প্রতিরোধে কঠোর নিয়ম ও জরিমানা
এবার ১২ বছরের নিচে শিশুদের হজে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, অনুমতিপত্র ছাড়া কেউ হজ পালনের চেষ্টা করলে তাকে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা এবং ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে।
গত বছর (১৪৪৫ হিজরি / ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে) মোট হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৬৪ জন। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে অবৈধ বা নিবন্ধনবিহীন হাজিদের মধ্যে, যারা প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
হজ ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি এবং শারীরিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলিমদের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ। হজের শুরুতে পুরুষ হজযাত্রীরা ইহরাম পরিধান করেন — দুটি সাদা কাপড়, আর নারীরা শালীন পোশাক পরে মাথা ঢেকে নেন। এরপর কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাঈ শেষে তাঁরা মিনায় যান এবং সেখান থেকে আজ আরাফায় পৌঁছান — যেখানে নবী করিম (সা.) বিদায় হজের খুতবা প্রদান করেছিলেন।
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মুসলমান আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব ও সম্মানের সঙ্গে পালন করছেন।