বিজ্ঞাপন
অনেকেই মনে করেন, এসব উপায়ে বোঝা যায় আমটি ফরমালিনমুক্ত কি না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব কৌশল আসলেই কতটা কার্যকর?
বাজারে প্রচলিত টিপসগুলোর মধ্যে রয়েছে, পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফেনা উঠলে সন্দেহজনক, তীব্র সুগন্ধ থাকলে সেটি স্বাভাবিকভাবে পাকা, আর যদি আমের গায়ে কালচে দাগ থাকে তবে সেটি কেমিক্যাল ছাড়াই গাছে পেকেছে বলে ধরা হয়। অনেকেই আবার আম চেপে দেখেন এটি নরম নাকি শক্ত।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পদ্ধতি বেশিরভাগই ভ্রান্ত এবং অপ্রমাণিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের এক অধ্যাপক জানান, “ফরমালিন বা ক্যালসিয়াম কার্বাইডের উপস্থিতি কেবল গন্ধ বা চেহারা দেখে বোঝা যায় না। এসব রাসায়নিক টেস্ট টিউবেই ধরা পড়ে, চোখে নয়।” তাঁর মতে, এসব ঘরোয়া কৌশলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ফরমালিন একটি বিষাক্ত রাসায়নিক যা দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ধীরে ধীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘমেয়াদে এটি ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অথচ অনেকেই মনে করেন, আমের রং সুন্দর, সুগন্ধ তীব্র—মানে সেটি নিরাপদ। বাস্তবে বিষয়টি ঠিক উল্টো হতে পারে।
তাহলে প্রশ্ন উঠেই যায়—নিরাপদ আম কেনা যাবে কোথা থেকে? এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বিশ্বস্ত উৎস থেকে আম কেনা, পরিচিত কৃষকের খামার থেকে সংগ্রহ করা, অথবা সরকারি তত্ত্বাবধানে বিক্রি হওয়া নির্দিষ্ট হাট-বাজার থেকে কেনাকাটা করাই নিরাপদ পদ্ধতি। অনেক অনলাইন ব্র্যান্ডও এখন ‘কেমিক্যাল ফ্রি টেস্টেড’ লেবেল দিয়ে নিরাপদ আম বিক্রি করছে, সেগুলো যাচাই করে কেনা যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ভোক্তাদের দায়িত্ব আরও বেশি। শুধু ঘরোয়া টিপসের ওপর ভরসা না করে, সচেতনভাবে নিরাপদ উৎস খুঁজে আম কেনা উচিত। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে এসব বিষয় নিয়ে আরও তথ্যভিত্তিক প্রচারণা চালানো দরকার। আম খাওয়ার আনন্দ যেন বিষে পরিণত না হয়, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।