ছবি: গাজার চিত্র
বিজ্ঞাপন
সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজারিক জেনেভায় বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “গাজায় যা ঘটছে তা শুধু আইনি সীমা নয়, নৈতিকতা ও মানবিকতার মৌলিক মানদণ্ডকেও অতিক্রম করেছে। মানবতা ব্যর্থ হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে অবজ্ঞা করে ধারাবাহিকভাবে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে। তার ভাষায়, “ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদাকে যেন ইচ্ছাকৃতভাবে পিষে ফেলা হচ্ছে।”
গাজায় রেড ক্রসের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা
গাজায় আইসিআরসির প্রায় ৩০০ কর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। রাফায় তাদের একটি ফিল্ড হাসপাতাল রয়েছে, যার পাশেই সম্প্রতি বিতর্কিত এক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গুলিবর্ষণে বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আইসিআরসি জানিয়েছে, সোমবার সকালে তাদের ফিল্ড হাসপাতালে ১৮৪ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য আসেন। তাদের মধ্যে ১৯ জন পথেই প্রাণ হারান এবং আরও ৮ জন হাসপাতালে মারা যান। সংস্থাটি জানায়, এই দিনটি ছিল হাসপাতালটি চালু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ একক হতাহতের দিন।
ত্রাণ সংকট আরও তীব্র
গাজায় সামান্য কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। বিশেষ করে উত্তর গাজায় কোনো ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইউনিসেফের একজন মুখপাত্র বলেন, “ত্রাণের পরিমাণ একেবারেই অপর্যাপ্ত এবং অনেক মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।”
বিতরণের সময় গুলি চালিয়ে ত্রাণপ্রত্যাশীদের হত্যার অভিযোগও রয়েছে। গত কয়েক দিনে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বুধবার এক দিনে গাজায় আরও ৯৫ জন নিহত ও ৪৪০ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট হতাহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪,৬০৭ জন নিহত এবং ১,২৫,৩৪১ জন আহত। অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন বাড়ছে। একটি ইসরায়েলি সংগঠন তেল আবিব থেকে গাজার সীমান্ত পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যুদ্ধ বন্ধ ও বন্দিদের মুক্তির দাবিতে তারা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছেন।
জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর আশঙ্কা
গাজায় স্থায়ী ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বুধবার একটি প্রস্তাব তোলা হয়। এতে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তির দাবিও অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে কূটনীতিকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাবে ভেটো দিতে পারে।
গ্রেটা থুনবার্গের গাজামুখী মিশন
জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও তাঁর ১১ সদস্যের দল ‘মাদলিন’ নামে ফ্রিডম ফ্লোটিলার একটি জাহাজে করে গাজার উদ্দেশে ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করেছেন। তবে ইসরায়েলের হেলেনিক কোস্টগার্ডের ড্রোন ইতোমধ্যে জাহাজটির ওপর নজরদারি চালিয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। ফলে হামলার আশঙ্কাও রয়েছে।
