বিজ্ঞাপন
যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের আদর্শকে জীবন্ত করে তোলে।
সকালে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ঈদের প্রধান অনুষঙ্গ—ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। ঈদগাহ ও মসজিদে খতিবগণ কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরে খুতবা প্রদান করেন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুসল্লিরা নামাজ আদায় ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, যা সামাজিক ঐক্যের এক অনন্য নজির।
ঈদ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বেসরকারি চ্যানেলগুলো ঈদ কেন্দ্রিক বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। এছাড়া হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে সরকারিভাবে।
নামাজ শেষে সামর্থ্যবান মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করছেন। কোরবানির পশুর মাংস গরিব, আত্মীয় ও নিজের মাঝে ভাগ করে নেওয়ার ইসলামী বিধান পালিত হচ্ছে যথারীতি। কোরবানির এই বিধান হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)-এর ঐতিহাসিক ত্যাগের ঘটনার স্মৃতিচারণ, যা ইসলামে ‘সুন্নাতে ইব্রাহিমি’ নামে পরিচিত।
বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হজও ঈদুল আজহার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। গতকাল সৌদি আরবে ঈদ উদযাপনের পর হাজিরা মুজদালিফা থেকে মিনায় ফিরে পশু কোরবানি ও অন্যান্য হজ কার্যাদি সম্পন্ন করেন। মক্কার আরাফাতের ময়দানে একত্র হয়ে তারা হজের মূল রোকন আদায় করেন।
এদিকে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন। সরকারের নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়, এবং পূর্বঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদের আগে দুই শনিবার অফিস চালু ছিল। যাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে খোলা রাখা হয়েছে দেশের সব সিএনজি ও ফিলিং স্টেশন, এবং যাত্রী ভোগান্তি রোধে মোবাইল টিমও কাজ করছে।
এই ঈদ কেবল আনন্দ আর উৎসব নয়, বরং এটি আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ ও ত্যাগের প্রকৃষ্ট নিদর্শন হিসেবে বিশ্ব মুসলিম সমাজে পালিত হয় প্রতি বছর।