ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, আর তার মূল পেছনে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ—ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা। বুধবার (৭ মে) লেনদেন শুরুর মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে, প্রধান সূচক ডিএসইএক্স হারায় ৭০.৯৭ পয়েন্ট বা ১.৪৩ শতাংশ।
ডিএসই সূত্র জানায়, বাজার খোলার প্রথম পাঁচ মিনিটেই সূচক পড়ে যায় ৫০ পয়েন্টের বেশি। পরবর্তী পাঁচ মিনিটে পতন আরও তীব্র হয়। শুধু ডিএসইএক্স নয়, অপর দুটি সূচক—ডিএসইএস এবং ডিএস৩০-ও যথাক্রমে ১.৬১ ও ১.১৪ শতাংশ কমে গেছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তাজনিত অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে তারা শেয়ার বিক্রি করে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছেন।
লেনদেনের শুরুর সময় বাজারে এক ধরনের আতঙ্ক ও হতাশা ছড়ায়, যার প্রতিফলন দেখা গেছে শেয়ারের দামে। মাত্র ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, বিপরীতে ৩৩৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেছে। অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টি কোম্পানির দর।
লেনদেনের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবি ব্যাংক এবং বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। তবে এসব ব্যতিক্রম বাদ দিলে বাজারের সার্বিক চিত্র ছিল অত্যন্ত দুর্বল ও হতাশাজনক।
বাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের মনস্তত্ত্বে ‘আশঙ্কার ছায়া’ গভীরভাবে পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধাবস্থা তৈরি হলে তার অর্থনৈতিক প্রভাব সীমান্ত ছাড়িয়ে যেতে পারে—এই শঙ্কায় কেউ কেউ শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার শুরু করেছেন। এর ফলে এক ধরনের তাৎক্ষণিক ধস সৃষ্টি হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ও দূরদর্শিতা অবলম্বন করা জরুরি। রাজনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে।
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে স্পষ্ট, বাংলাদেশ পুঁজিবাজার এখন কেবল দেশের অর্থনীতির অবস্থা নয়, আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেরও প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা এবং দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।