ভোরের বাণী
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চর ও বে টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। ছবি: বাসস
বিজ্ঞাপন
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের লালদিয়া চরে নির্মাণাধীন কনটেইনার টার্মিনালে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে লালদিয়া চর ও বে টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বার্ষিক FDI ৭০০ মিলিয়নের বেশি নয়। তাই একটি প্রকল্পেই যদি ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়, সেটি দেশের অর্থনীতির জন্য ঐতিহাসিক সাফল্য হবে। এতে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”
চট্টগ্রাম বন্দরের এই নতুন গ্রিন পোর্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এপি মোলার মায়ের্স্ক-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস। এটি দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) এবং সরকার-থেকে-সরকার ভিত্তিতে বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার (BOT) পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০২৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের প্রাথমিক বিনিয়োগ ছিল ৩০০-৪০০ মিলিয়ন ডলার। তবে সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ করে ৮০০ মিলিয়নে উন্নীত করা হয়েছে।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য—বাংলাদেশকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত করা। লালদিয়ার এই কনটেইনার টার্মিনাল হবে বিশ্বমানের গ্রিন পোর্ট, যা শুধু চট্টগ্রাম নয়, পুরো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সরাসরি অবদান রাখবে।”
তিনি জানান, বন্দর সক্ষমতা বর্তমানে সীমিত। এমনকি ছয় গুণ বাড়ানোর পরও আমরা ভিয়েতনামের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারি না। এজন্য আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম আরও দক্ষ করতে হবে।
এই সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান।
চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী আখ্যা দিয়ে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “রাজনৈতিক রাজধানী ঢাকা হলেও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে চট্টগ্রাম। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এই অঞ্চলই হবে মূল চালিকাশক্তি।”
সরকার ইতিমধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং সম্ভাব্য স্থান হিসেবে চট্টগ্রামের আনোয়ারা এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এই বিনিয়োগ উদ্যোগ চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বন্দরনির্ভর শিল্প, পরিবহন ও রপ্তানি খাতে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।