ভোরের বাণী
বিজ্ঞাপন
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন, যার মোট আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ বরাদ্দই গেছে পাঁচটি প্রধান খাতে, যেখানে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত একাই পাচ্ছে ২৫.৬৪ শতাংশ বা ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা।
রোববার (১৮ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এডিপির খসড়া অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, আর্থিক সংকট ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে এবারের উন্নয়ন বাজেট চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম রাখা হয়েছে।
উন্নয়ন বাজেটের অর্থায়ন কাঠামো অনুযায়ী, ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা আসবে সরকারি তহবিল থেকে, আর ৮৬ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে। মোট ১১৪২টি প্রকল্পে এই বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বড় ৫ খাতেই অধিকাংশ অর্থ
১. পরিবহন ও যোগাযোগ খাত: ২৫.৬৪% (৫৮,৯৭৩ কোটি টাকা)
২. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: ১৪.০৮% (৩২,৩৯২ কোটি টাকা)
৩. শিক্ষা খাত: ১২.৪২% (২৮,৫৫৭ কোটি টাকা)
৪. গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধা: ৯.৯০% (২২,৭৭৬ কোটি টাকা)
৫. স্বাস্থ্য খাত: ৭.৮৯% (১৮,১৪৮ কোটি টাকা)
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতেও সীমিত পরিসরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে:
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন: ১৩,৪৭২ কোটি
কৃষি: ১০,৭৯৫ কোটি
পরিবেশ ও পানিসম্পদ: ১০,৬৪১ কোটি
বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি: ৩,৮৯৪ কোটি
জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা: ২,৭৭৭ কোটি
প্রতিরক্ষা: ৪৭৫ কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, তবে তা সংশোধন করে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটিতে নামিয়ে আনা হয়েছিল। এবার তা থেকে আরও কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটিতে। তবে সংশোধিত এডিপির তুলনায় তা ১৪ হাজার কোটি টাকা বেশি।
সরকারি তহবিল থেকে অর্থায়ন গতবারের তুলনায় ২১ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এবার ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রাও কমেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা।
বিশ্লেষণ বলছে, আগামী অর্থবছরের এডিপি পরিকল্পনায় সরকার বিনিয়োগে বাস্তবতা বিবেচনায় রেখেছে, যেখানে রূপকল্প ২০৪১-এর দিকনির্দেশনা ও মেগা প্রকল্পের অগ্রগতি নিশ্চিতে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।