আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গুমের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “র্যাবের যে কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের ভার্চুয়ালি শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য একজন আইনজীবী আবেদন করেছিলেন। আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বিচারকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন, যা আমরা শুনানির সময় লক্ষ্য করেছি। আদালত স্পষ্ট বলেছেন, এটি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিচার নয়। আসামিরা র্যাবের দায়িত্বে থাকাকালীন অবস্থায় এই মারাত্মক অপরাধ সংঘটিত করেছেন। এই ধরনের অপরাধকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই বিশেষ সুবিধার আবেদন খারিজ করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিক সমান। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গুরুতর। তাই সবাইকে সমান সুবিধা দেওয়া হবে। বিচারের সাজাপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা নির্দোষ। তবে যেসব সুবিধা অন্যান্য আসামি ভোগ করেন, তার বাইরে নতুন কিছু তারা পাবেন না।”
প্রসিকিউশন জানায়, মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হয়েছে। তবে আসামিপক্ষে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। পরবর্তী শুনানি ১৪ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে।
সেনা হেফাজতে থাকা ১০ জন র্যাব কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
পলাতকরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।
এর আগে, ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নির্ধারিত ছিল ২৩ নভেম্বর, তবে পরবর্তী শুনানি ৩ ডিসেম্বর সম্পন্ন হয়। পলাতক আসামিদের হাজির করার জন্য আদালত দুই জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়।
প্রসিকিউশন ৮ অক্টোবর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে, যা পরে ট্রাইব্যুনাল আমলে নেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...