Logo Logo
ইকোনমিক

টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস খাতে গ্যাস সংকট, ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হুমকিতে


ভোরের বাণী

Splash Image


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক শিল্প (আরএমজি) এক ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাস সরবরাহ হঠাৎ করেই তীব্রভাবে কমে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খাতসংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ভূলতা, মাওনা ও টঙ্গীর মতো শিল্পঘন অঞ্চলে গ্যাসের তীব্র ঘাটতির ফলে অনেক কারখানা আংশিক কিংবা পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। গাজীপুরের ইসরাক স্পিনিং মিলস লিমিটেড বিগত এক সপ্তাহ ধরে অর্ধেকেরও কম উৎপাদন করছে।

লিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, “গ্যাস না থাকায় প্রতিদিনের সুতা উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কখনো কখনো শূন্য গ্যাস চাপ নিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।”

বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) জানায়, প্রতিদিন টেক্সটাইল ও নিটিং খাতে প্রয়োজন ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস, কিন্তু সরবরাহ মিলছে মাত্র ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট শুধু গ্যাসের ঘাটতিতেই সীমাবদ্ধ নয়। কোভিড-১৯ পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের দাম বাড়া, পশ্চিমা ক্রেতাদের অর্ডার স্থগিত করা এবং আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এমনিতেই খাতটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তার ওপর গ্যাস সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) জানিয়েছে, প্রতিটি স্পিনিং ইউনিট প্রতিদিন গড়ে ২৫ লাখ টাকা লোকসানে পড়ছে। সংস্থাটির আওতায় থাকা প্রায় ৫০০ স্পিনিং মিলের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান উৎপাদন বন্ধের দ্বারপ্রান্তে।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও সরবরাহ বাড়েনি। দ্রুত এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করলে শিল্প খাতে বিপর্যয় অনিবার্য।”

প্রাথমিক টেক্সটাইল খাতে (স্পিনিং, উইভিং, ডাইং, ফিনিশিং, প্রিন্টিং) ইতোমধ্যেই ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। অন্যদিকে, তৈরি পোশাক খাত প্রতিবছর প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ।

ব্যবসায়িক নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন—এই সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে, রপ্তানি আয় কমে যাবে এবং দেশের অর্থনীতি ভয়াবহ চাপে পড়বে।

আরও পড়ুন

ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্রাণ মজুত, তবুও নেই সহায়তা : ঝড়-বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বৃদ্ধ দম্পতির মানবেতর জীবন-যাপন
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ব্যক্তি ও সমাজ, ঈদুল আজহায় এনসিপির শুভেচ্ছা বার্তা