বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসকের চিঠিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেলায় গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, নার্সিং কলেজ এবং ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিসহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। এসব প্রতিষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন, যাদের অধিকাংশের স্থায়ী ঠিকানা গোপালগঞ্জ জেলার বাইরে।
বর্তমানে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। দীর্ঘ ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার এই যাত্রা সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ। জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন বছরে গোপালগঞ্জে ৩৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৬ জন নিহত এবং ৪৯২ জন আহত হয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষের জানমাল চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক তাঁর প্রস্তাবে বলেছেন, “গোপালগঞ্জ জেলার বিপুলসংখ্যক ঢাকাগামী শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যাতায়াতের সুবিধা, ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা এবং সময় ও অর্থ সাশয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গোবরা স্টেশন থেকে ঢাকামুখী অন্তত দুটি সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করা জরুরি।”
বর্তমানে গোপালগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী গোবরা রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন একটি ট্রেন রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং সন্ধ্যায় ফিরে আসে। এই স্টেশনটি বাগেরহাটের মোল্লাহাট থেকে ৫ কিলোমিটার, নড়াইলের কালিয়া উপজেলা থেকে ১২ কিলোমিটার এবং পিরোজপুরের উজিরপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কিন্তু ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোলগামী ট্রেনগুলো বর্তমানে কাশিয়ানী হয়ে যাওয়ায় গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলার যাত্রীরা রেলসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জেলা প্রশাসকের প্রস্তাবের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছেও পাঠানো হয়েছে। গত ৫ অক্টোবর জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ চিঠি প্রেরণ করা হয়।
প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও নড়াইল জেলার হাজারো মানুষ নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্য এবং সাশ্রয়ী ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। এটি শুধু সময় ও অর্থ সাশয় করবে না, বরং সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে মানুষের নিরাপদ যাত্রার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...