বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে হায়েস আলীর মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃত হায়েস আলী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের কাথুলী গ্রামের গোলাম রসুলের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে— হায়েস আলী বিষাক্ত মদপানেই মারা গেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিনি নেশায় আসক্ত ছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন মিলে মদ পান করেন। পরে একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রথমে দুইজন এবং পরদিন রোববার আরও চারজন মারা যান। তাদের মধ্যে চারজনের মরদেহ পরিবারের সদস্যরা গোপনে দাফন করেছেন বলে জানা গেছে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন— সদর উপজেলার নফরকান্তি গ্রামের খেদের আলী (৪০), খেজুরা গ্রামের সেলিম (৪০), পিরোজখালী গ্রামের লালটু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ গ্রামের সামির (৫৫) ও সরদার লালটু (৫২)।
এ ঘটনায় সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে। নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান। এ সময় মদপানে অসুস্থ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, “স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল এলাকাবাসীকে সচেতন করছে। আমরা একজনকে অসুস্থ অবস্থায় খুঁজে পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টক্সিকোলজি বিভাগ বিনা খরচে চিকিৎসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়াও তারা বহন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা এখনো গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারা দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যোগাযোগ না করলে ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।”
অপরদিকে, এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে অবৈধভাবে মদ বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয় এক ক্ষুব্ধ বাসিন্দা বলেন, “বছরের পর বছর ধরে এখানে মদ বিক্রি হচ্ছে— কেউ কিছু বলে না। এখন সাতজনের প্রাণ গেল, তবু কি প্রশাসন নড়বে?”
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ও অ্যালকোহলের উৎস অনুসন্ধানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...