ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলার পর শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে সেনাবাহিনী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির স্থানীয় নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। ঘটনাটি এখন জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে।
সূত্র জানায়, রংপুরের সেনপাড়ায় ‘দ্য স্কাই ভিউ’ নামক ভবনে জিএম কাদেরের বাসভবনে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে হামলা চালানো হয়। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মিছিল থেকে বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, ঘটনার সময় জিএম কাদের নিজে বাসায় অবস্থান করছিলেন।
এই ঘটনায় দেশব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়লে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের সদস্যরা নগরীর পায়রা চত্বর মোড়ে অভিযান চালান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ ও ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিকে।
খবর পেয়ে বৃষ্টির মধ্যেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন।
এ সময় ব্রিগেডিয়ার হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, “শরীরে যতক্ষণ রক্ত আছে, উই আর নট গোয়িং টু প্রমোট এনিওয়ান যে দেশের বিরুদ্ধে করে।” তিনি আরো বলেন, “জনগণের অসুবিধা সৃষ্টি, ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ যেই করুক—তাদের বার্তা দিতে হবে, এই দেশে এ ধরনের কাজ আর বরদাস্ত করা হবে না।”
সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্তের স্বার্থে যেকোনো দল—বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা এনসিপির কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে এমন গভীর রাতে জিজ্ঞাসাবাদ না করে দিনের বেলায় অফিস সময়েই ডাকা হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
স্থানীয় বিএনপি নেতারাও সেনা জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আসেন বলে জানা গেছে। রাত প্রায় ২টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এই ঘটনা রংপুর তথা জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সঞ্চার করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন সরাসরি হস্তক্ষেপ বিরল হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সমর্থনযোগ্য কি না—সে প্রশ্নও এখন আলোচনায়।