বিজ্ঞাপন
পুলিশ জানায়, হরতালের সময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। কোয়েটাসহ সারা প্রদেশে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে সাড়িয়াব, বিমানবন্দর সড়ক, পশতুনাবাদ, নওয়া কিল্লি ও জিন্নাহ রোডে ব্যারিকেড সরাতে গিয়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক স্থানে টিয়ারগ্যাস এবং ফাঁকা গুলি ব্যবহার করে।
বিরোধী জোট ‘তেহরিক-ই-তাহাফুজ-ই-আইন-ই-পাকিস্তান’ এর কর্মীরা সকাল থেকেই জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যারিকেড বসান এবং পাথর ছুঁড়ে হরতাল কার্যকর করতে চেষ্টা করেন। এর ফলে প্রদেশের সড়কপথে চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সীমান্তবর্তী চামান ও তাফতান শহরের বাণিজ্য কার্যক্রম থমকে যায়। তবে বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনে নিরাপত্তারক্ষীদের কঠোর নজরদারিতে কার্যক্রম চালু ছিল।
কোয়েটায় ব্যবসা-বাণিজ্যও স্থবির হয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ রাখার পাশাপাশি বিরোধী দলের কর্মীরা ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোতে টহল দেয়। পুলিশ গ্রেপ্তার করে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে, যার মধ্যে রয়েছে পিকেএমএপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম জিয়ারাতওয়াল, সাবেক এমএনএ আবদুল কাহার ওয়াদান এবং বিএনপি-মেঙ্গলের মীর নাসির আহমেদ শাহওয়ানি।
শিক্ষা কার্যক্রমেও প্রভাব পড়ে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অফিস খোলা ছিল। তবে সীমিত যান চলাচলের কারণে খুব অল্পসংখ্যক কর্মী অফিসে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
প্রাদেশিক অন্যান্য জেলাগুলো—লোরালাই, ঝোব, সিবি, নাসিরাবাদ, খুজদার, কালাত, হারনাই, মস্তুঙ, হাববেলা, খারান, নোশকি, কিলা সাইফুল্লাহ, তুরবত, পাঞ্জগুর, গওয়াদর ও ডেরা মুরাদ জামালি—এও হরতালের আওতায় আসে। এসব এলাকায় অন্তত ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বেলুচিস্তানের বাইরে খাইবার পাখতুনখোয়াতেও বিরোধী দলগুলো এবং ক্ষমতাসীন পিটিআই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর কোয়েটায় বিএনপি-মেঙ্গলের সমাবেশে আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়। ওই হামলার সময় পিকেএমএপির প্রধান মাহমুদ খান আছাকজাই, বিএনপি-মেঙ্গলের সভাপতি সরদার আকতার মেঙ্গলসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা অল্পের জন্য রক্ষা পান।
সোমবার সন্ধ্যায় কোয়েটা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পিকেএমএপির লালা আবদুর রউফ, বিএনপি-মেঙ্গলের সাজিদ তারীন, এএনপির আসগর আছাকজাই, ন্যাশনাল পার্টির আসলাম বেলুচ, জামায়াতে ইসলামের জাহিদ আখতার এবং পিটিআইয়ের দাউদ শাহ আছাকজাই একযোগে সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তারা অভিযোগ করেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
নেতারা ঘোষণা দেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর প্রদেশের সব প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। ১৩ সেপ্টেম্বর জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠকে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করা হবে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...