Logo Logo

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন


Splash Image

মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : প্রেস উইং

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


তিনি জানিয়েছেন, রমজানের আগেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে এবং তার প্রস্তুতি আগামীকাল থেকেই শুরু হবে।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাতে প্রচারিত এ ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করেন।”

তিনি আরও বলেন, “এবার আমাদের সর্বশেষ দায়িত্ব পালনের পালা—নির্বাচন অনুষ্ঠান। আজ এই মহান দিবসে আপনাদের সামনে এ বক্তব্য রাখার পর থেকেই আমরা আমাদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করব। এবার আমরা একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করব।”

অধ্যাপক ইউনূস প্রতিশ্রুতি দেন, একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, “আপনারা সকলেই দোয়া করবেন যেন সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এ দেশের সকল নাগরিক একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারে।”

ভোটের পরিবেশকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে তুলতে মানসিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। বলেন, “নির্বাচন যেন শান্তি-শৃঙ্খলা, সৌহার্দ্য ও ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে, সে লক্ষ্যেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

ভাষণে প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, “অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ বিধস্ত বাংলাদেশ যে আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তার বড় কারণ হলো আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান। নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে।”

নারী ভোটারদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ সৃষ্টির প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “এবার যেন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নারী ভোটারদের ঢল নামে, আমরা সেই লক্ষ্যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”

ভোটাধিকার বঞ্চনার বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে নাগরিকবৃন্দ ভোট দিতে পারেনি। এবারের নির্বাচনে আমরা আমাদের বকেয়া আনন্দসহ মহা আনন্দে ভোট দিতে চাই। এবারের নির্বাচনে জীবনে প্রথমবার ভোট দিতে যাবে এরকম ভোটাররা নানা উৎসবের মধ্য দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবে।”

প্রধান উপদেষ্টা জানান, প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাচ্ছে এমন তরুণ-তরুণীদের জন্য এ নির্বাচন হবে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। “নতুন নারী ভোটার থাকবে, নতুন পুরুষ ভোটার থাকবে। এমন অনেকেই থাকবে যারা ভোটার হয়েও জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেনি।”

ভোটের দিনকে ‘ঈদের উৎসবের’ মতো করতে চান জানিয়ে ইউনূস বলেন, “এবারের ভোটের আনন্দ থাকবে সবার মধ্যে। আপনারা সবাই বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নাগরিক অধিকার প্রয়োগের মহা আনন্দ পরবর্তী বংশধরদের কাছে তুলে ধরার জন্য। এখন থেকে প্রতিদিন আলাপ করুন, আপনার এলাকায় ভোটদান ব্যবস্থা কেমন হলে সুন্দর হয়।”

“নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজের ভিত্তি রচনা হবে এবারের নির্বাচনে,”—এই বার্তার মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে ভাষণ শেষ করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...